বিতর ছালাত (صلاة الوتر)
বিতর ছালাত সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ।[1] যা এশার ফরয ছালাতের পর হ’তে ফজর পর্যন্ত সুন্নাত ও নফল ছালাত সমূহের শেষে আদায় করতে হয়।[2] বিতর ছালাত খুবই ফযীলতপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বাড়ীতে বা সফরে কোন অবস্থায় বিতর ও ফজরের দু’রাক‘আত সুন্নাত পরিত্যাগ করতেন না।[3]
‘বিতর’ অর্থ বেজোড়। যা মূলতঃ এক রাক‘আত। কেননা এক রাক‘আত যোগ না করলে কোন ছালাতই বেজোড় হয় না।http://islamic-blog-bangla.blogspot.com/2016/06/blog-post_27.html?m=1 রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘রাতের নফল ছালাত দুই দুই (مَثْنَى مَثْنَى)। অতঃপর যখন তোমাদের কেউ ফজর হয়ে যাবার আশংকা করবে, তখন সে যেন এক রাক‘আত পড়ে নেয়। যা তার পূর্বেকার সকল নফল ছালাতকে বিতরে পরিণত করবে’।[4] অন্য হাদীছে তিনি বলেন, اَلْوِتْرُ رَكْعَةٌ مِّنْ آخِرِ اللَّيْلِ ‘বিতর রাত্রির শেষে এক রাক‘আত মাত্র’।[5] আয়েশা (রাঃ) বলেন, وَكَانَ يُوْتِرُ بِوَاحِدَةٍ ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এক রাক‘আত দ্বারা বিতর করতেন’। [6]
রাতের নফল ছালাত সহ বিতর ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১৩ রাক‘আত পর্যন্ত (وَلاَ بِأَكْثَرَ مِنْ ثَلاَثَ عَشْرَةَ) পড়া যায় এবং তা প্রথম রাত্রি, মধ্য রাত্রি, ও শেষ রাত্রি সকল সময় পড়া চলে।[7] যদি কেউ বিতর পড়তে ভুলে যায় অথবা বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে যায়, তবে স্মরণ হ’লে কিংবা রাতে বা সকালে ঘুম হ’তে জেগে উঠার পরে সুযোগ মত তা আদায় করবে।[8] অন্যান্য সুন্নাত-নফলের ন্যায় বিতরের ক্বাযাও আদায় করা যাবে।[9] তিন রাক‘আত বিতর একটানা ও এক সালামে পড়াই উত্তম।[10] ৫ রাক‘আত বিতরে একটানা পাঁচ রাক‘আত শেষে বৈঠক ও সালাম সহ বিতর করবে। [11] সাত ও নয় রাক‘আত বিতরে ছয় ও আট রাক‘আতে প্রথম বৈঠক করবে। অতঃপর সপ্তম ও নবম রাক‘আতে শেষ বৈঠক করে সালাম ফিরাবে।[12]
কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে বিতর সালাত
চার খলীফাসহ অধিকাংশ ছাহাবী, তাবেঈ ও মুজতাহিদ ইমামগণ এক রাক‘আত বিতরে অভ্যস্ত ছিলেন।[13] অতএব ‘এক রাক‘আত বিতর সঠিক নয় এবং এক রাক‘আতে কোন ছালাত হয় না’। ‘বিতর তিন রাক‘আতে সীমাবদ্ধ’। ‘বিতর ছালাত মাগরিবের ছালাতের ন্যায়’। ‘তিন রাক‘আত বিতরের উপরে উম্মতের ইজমা হয়েছে’ বলে যেসব কথা সমাজে চালু আছে, শরী‘আতে এর কোন ভিত্তি নেই’।[14] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা মাগরিবের ছালাতের ন্যায় (মাঝখানে বৈঠক করে) বিতর আদায় করো না’।[15] উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তিন রাক‘আত বিতরের ১ম রাক‘আতে সূরা আ‘লা, ২য় রাক‘আতে সূরা কাফেরূণ ও ৩য় রাক‘আতে সূরা ইখলাছ পাঠ করতেন। ঐ সাথে ফালাক্ব ও নাস পড়ার কথাও এসেছে।[16] এসময় তিনি শেষ রাক‘আতে ব্যতীত সালাম ফিরাতেন না (وَلاَ يُسَلِّمُ إِلاَّ فِي آخِرِهِنَّ)। [17]
কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে বিতর সালাত
কুনূত (القنوت) :
কুনূত’ অর্থ বিনম্র আনুগত্য। কুনূত দু’প্রকার। কুনূতে রাতেবাহ ও কুনূতে নাযেলাহ। প্রথমটি বিতর ছালাতের শেষ রাক‘আতে পড়তে হয়। দ্বিতীয়টি বিপদাপদ ও বিশেষ কোন যরূরী কারণে ফরয ছালাতের শেষ রাক‘আতে পড়তে হয়। বিতরের কুনূতের জন্য হাদীছে বিশেষ দো‘আ বর্ণিত হয়েছে।[18] বিতরের কুনূত সারা বছর পড়া চলে।[19] তবে মাঝে মধ্যে ছেড়ে দেওয়া ভাল। কেননা বিতরের জন্য কুনূত ওয়াজিব নয়। [20] দো‘আয়ে কুনূত রুকূর আগে ও পরে[21] দু’ভাবেই পড়া জায়েয আছে। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে যে,https://islamiclifejourney.com/wp-admin/post-new.php
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَّدْعُوَ عَلَى أَحَدٍ أَوْ لِأَحَدٍ قَنَتَ بَعْدَ الرُّكُوْعِ، متفق عليه-
‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কারো বিরুদ্ধে বা কারো পক্ষে দো‘আ করতেন, তখন রুকূর পরে কুনূত পড়তেন…।[22] ইমাম বায়হাক্বী বলেন,
رُوَاةُ الْقُنُوْتِ بَعْدَ الرُّكُوْعِ أَكْثَرُ وَأَحْفَظُ وَعَلَيْهِ دَرَجَ الْخُلَفَاءُ الرَّاشِدُوْنَ-
‘রুকূর পরে কুনূতের রাবীগণ সংখ্যায় অধিক ও অধিকতর স্মৃতিসম্পন্ন এবং এর উপরেই খুলাফায়ে রাশেদ্বীন আমল করেছেন’। [23] হযরত ওমর, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ, আনাস, আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবী থেকে বিতরের কুনূতে বুক বরাবর হাত উঠিয়ে দো‘আ করা প্রমাণিত আছে।[24] কুনূত পড়ার জন্য রুকূর পূর্বে তাকবীরে তাহরীমার ন্যায় দু’হাত উঠানো ও পুনরায় বাঁধার প্রচলিত প্রথার কোন বিশুদ্ধ দলীল নেই।[25] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলকে জিজ্ঞেস করা হ’ল যে, বিতরের কুনূত রুকূর পরে হবে, না পূর্বে হবে এবং এই সময় দো‘আ করার জন্য হাত উঠানো যাবে কি-না। তিনি বললেন, বিতরের কুনূত হবে রুকূর পরে এবং এই সময় হাত উঠিয়ে দো‘আ করবে।[26] ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) বলেন, বিতরের কুনূতের সময় দু’হাতের তালু আসমানের দিকে বুক বরাবর উঁচু থাকবে। ইমাম ত্বাহাবী ও ইমাম কার্খীও এটাকে পসন্দ করেছেন।[27] এই সময় মুক্তাদীগণ ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলবেন।[28]
দো‘আয়ে কুনূত (دعاء قنوت الوتر) :
কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে বিতর সালাত
হাসান বিন আলী (রাঃ) বলেন যে, বিতরের কুনূতে বলার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে নিম্নোক্ত দো‘আ শিখিয়েছেন।-
اَللَّهُمَّ اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنِىْ فِيْمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنِيْ فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لِيْ فِيْمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنِيْ شَرَّ مَا قَضَيْتَ، فَإِنَّكَ تَقْضِىْ وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ، إنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ، وَ لاَ يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ، وَصَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِىِّ-
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাহ্দিনী ফীমান হাদায়তা, ওয়া ‘আ-ফিনী ফীমান ‘আ-ফায়তা, ওয়া তাওয়াল্লানী ফীমান তাওয়াল্লায়তা, ওয়া বা-রিক্লী ফীমা ‘আ‘ত্বায়তা, ওয়া ক্বিনী শার্রা মা ক্বাযায়তা; ফাইন্নাকা তাক্বযী ওয়া লা ইয়ুক্বযা ‘আলায়কা, ইন্নাহূ লা ইয়াযিল্লু মাঁও ওয়া-লায়তা, ওয়া লা ইয়া‘ইয্ঝু মান্ ‘আ-দায়তা, তাবা-রক্তা রববানা ওয়া তা‘আ-লায়তা, ওয়া ছাল্লাল্লা-হু ‘আলান্ নাবী’ ।[29]
জামা‘আতে ইমাম ছাহেব ক্রিয়াপদের শেষে একবচন…‘নী’-এর স্থলে বহুবচন…. ‘না’ বলতে পারেন।[30]
অনুবাদ : হে আল্লাহ! তুমি যাদেরকে সুপথ দেখিয়েছ, আমাকে তাদের মধ্যে গণ্য করে সুপথ দেখাও। যাদেরকে তুমি মাফ করেছ, আমাকে তাদের মধ্যে গণ্য করে মাফ করে দাও। তুমি যাদের অভিভাবক হয়েছ, তাদের মধ্যে গণ্য করে আমার অভিভাবক হয়ে যাও। তুমি আমাকে যা দান করেছ, তাতে বরকত দাও। তুমি যে ফায়ছালা করে রেখেছ, তার অনিষ্ট হ’তে আমাকে বাঁচাও। কেননা তুমি সিদ্ধান্ত দিয়ে থাক, তোমার বিরুদ্ধে কেউ সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তুমি যার সাথে বন্ধুত্ব রাখ, সে কোনদিন অপমানিত হয় না। আর তুমি যার সাথে দুশমনী কর, সে কোনদিন সম্মানিত হ’তে পারে না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি বরকতময় ও সর্বোচ্চ। আল্লাহ তাঁর নবীর উপরে রহমত বর্ষণ করুন’।কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে বিতর সালাত
দো‘আয়ে কুনূত শেষে মুছল্লী ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সিজদায় যাবে।[31] কুনূতে কেবল দু’হাত উঁচু করবে। মুখে হাত বুলানোর হাদীছ যঈফ।[32] বিতর শেষে তিনবার সরবে ‘সুবহা-নাল মালিকিল কুদ্দূস’ শেষদিকে দীর্ঘ টানে বলবে’।[33] অতঃপর ইচ্ছা করলে বসেই সংক্ষেপে দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করবে এবং সেখানে প্রথম রাক‘আতে সূরা যিলযাল ও দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা কাফেরূণ পাঠ করবে।[34]
উল্লেখ্য যে, اَللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ আল্লা-হুম্মা ইন্না নাস্তা‘ঈনুকা ওয়া নাস্তাগফিরুকা…’ বলে বিতরে যে কুনূত পড়া হয়, সেটার হাদীছ ‘মুরসাল’ বা যঈফ।[35] অধিকন্তু এটি কুনূতে নাযেলাহ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে, কুনূতে রাতেবাহ হিসাবে নয়।[36] অতএব বিতরের কুনূতের জন্য উপরে বর্ণিত দো‘আটিই সর্বোত্তম। [37]
ইমাম তিরমিযী বলেন, لاَ نَعْرِفُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقُنُوْتِ شَيْئًا أَحْسَنَ مِنْ هَذَا ‘নবী করীম (ছাঃ) থেকে কুনূতের জন্য এর চেয়ে কোন উত্তম দো‘আ আমরা জানতে পারিনি’।[38]
কুনূতে নাযেলাহ (قنوت النازلة) :
যুদ্ধ, শত্রুর আক্রমণ প্রভৃতি বিপদের সময় অথবা কারুর জন্য বিশেষ কল্যাণ কামনায় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে বিশেষভাবে এই দো‘আ পাঠ করতে হয়। ‘কুনূতে নাযেলাহ’ ফজর ছালাতে অথবা সব ওয়াক্তে ফরয ছালাতের শেষ রাক‘আতে রুকূর পরে দাঁড়িয়ে ‘রববানা লাকাল হাম্দ’ বলার পরে দু’হাত উঠিয়ে সরবে পড়তে হয়। [39] কুনূতে নাযেলাহর জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে নির্দিষ্ট কোন দো‘আ বর্ণিত হয়নি। অবস্থা বিবেচনা করে ইমাম আরবীতে[40] দো‘আ পড়বেন ও মুক্তাদীগণ ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলবেন। [41] রাসূল (ছাঃ) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি বা শক্তির বিরুদ্ধে এমনকি এক মাস যাবৎ একটানা বিভিন্নভাবে দো‘আ করেছেন।[42] তবে হযরত ওমর (রাঃ) থেকে এ বিষয়ে একটি দো‘আ বর্ণিত হয়েছে। যা তিনি ফজরের ছালাতে পাঠ করতেন এবং যা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে দৈনিক পাঁচবার ছালাতে পাঠ করা যেতে পারে। যেমন:-
اَللَّهُمَّ اغْفِرْلَنَا وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ، وَأَلِّفْ بَيْنَ قُلُوْبِهِمْ وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ وَعَدُوِّهِمْ، اَللَّهُمَّ الْعَنِ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِكَ وَيُكَذِّبُوْنَ رُسُلَكَ وَيُقَاتِلُوْنَ أَوْلِيَاءَكَ، اَللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمْ وَزَلْزِِلْ أَقْدَامَهُمْ وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِيْ لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِيْنَ-
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাগফির লানা ওয়া লিল মু’মিনীনা ওয়াল মু‘মিনা-তি ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমা-তি, ওয়া আল্লিফ বায়না কুলূবিহিম, ওয়া আছলিহ যা-তা বায়নিহিম, ওয়ান্ছুরহুম ‘আলা ‘আদুউবিকা ওয়া ‘আদুউবিহিম। আল্লা-হুম্মাল‘আনিল কাফারাতাল্লাযীনা ইয়াছুদ্দূনা ‘আন সাবীলিকা ওয়া ইয়ুকায্যিবূনা রুসুলাকা ওয়া ইয়ুক্বা-তিলূনা আউলিয়া-আকা। আল্লা-হুম্মা খা-লিফ বায়না কালিমাতিহিম ওয়া ঝালঝিল আক্বদা-মাহুম ওয়া আনঝিল বিহিম বা’সাকাল্লাযী লা তারুদ্দুহূ ‘আনিল ক্বাউমিল মুজরিমীন।কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে বিতর সালাত
অনুবাদ : হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে এবং সকল মুমিন-মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা করুন। আপনি তাদের অন্তর সমূহে মহববত পয়দা করে দিন ও তাদের মধ্যকার বিবাদ মীগোশতা করে দিন। আপনি তাদেরকে আপনার ও তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য করুন। হে আল্লাহ! আপনি কাফেরদের উপরে লা‘নত করুন। যারা আপনার রাস্তা বন্ধ করে, আপনার প্রেরিত রাসূলগণকে অবিশ্বাস করে ও আপনার বন্ধুদের সাথে লড়াই করে। হে আল্লাহ! আপনি তাদের দলের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করে দিন ও তাদের পদসমূহ টলিয়ে দিন এবং আপনি তাদের মধ্যে আপনার প্রতিশোধকে নামিয়ে দিন, যা পাপাচারী সম্প্রদায় থেকে আপনি ফিরিয়ে নেন না’।[43]
অতঃপর প্রথমবার বিসমিল্লাহ… সহ ইন্না নাস্তা‘ঈনুকা …. এবং দ্বিতীয়বার বিসমিল্লাহ… সহ ইন্না না‘বুদুকা …বর্ণিত আছে।[44]
উল্লেখ্য যে, উক্ত ‘কুনূতে নাযেলাহ’ থেকে মধ্যম অংশটুকু অর্থাৎ ইন্না নাস্তা‘ঈনুকা … নিয়ে সেটাকে ‘কুনূতে বিতর’ হিসাবে চালু করা হয়েছে, যা নিতান্তই ভুল। আলবানী বলেন যে, এই দো‘আটি ওমর (রাঃ) ফজরের ছালাতে কুনূতে নাযেলাহ হিসাবে পড়তেন। এটাকে তিনি বিতরের কুনূতে পড়েছেন বলে আমি জানতে পারিনি।[45]
কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে বিতর সালাত
[1] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৪৩; নাসাঈ হা/১৬৭৬; মির‘আত ২/২০৭; ঐ, ৪/২৭৩-৭৪; শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী, হুজ্জাতুল্লা-হিল বা-লিগাহ ২/১৭। [2] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৪৪; ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৯২-৯৩। [3] . ইবনুল ক্বাইয়িম, যা-দুল মা‘আ-দ (বৈরূত : মুওয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ২৯ সংস্করণ, ১৪১৬/১৯৯৬) ১/৪৫৬। [4] . عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صَلاَةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى، فَإِذَا خَشِيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ صَلَّى رَكْعَةً وَاحِدَةً تُوتِرُ لَهُ مَا قَدْ صَلَّى- বুখারী (ফাৎহ সহ) হা/৯৯০ ‘বিতর’ অধ্যায়-১৪; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২৫৪ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘বিতর’ অনুচ্ছেদ-৩৫। [5] . মুসলিম, মিশকাত হা/১২৫৫। [6] . ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৮৫। [7] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৪৫; আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৬৩-৬৫; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২৬১। [8] . তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ মিশকাত হা/১২৬৮, ১২৭৯; নায়ল ৩/২৯৪, ৩১৭-১৯, মির‘আত ৪/২৭৯। [9] . ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৪৮; নায়লুল আওত্বার ৩/৩১৮-১৯। [10] . মির‘আত ৪/২৭৪; হাকেম ১/৩০৪ পৃঃ। [11] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২৫৬; মির‘আত ৪/২৬২। [12] . মুসলিম, মিশকাত হা/১২৫৭; বায়হাক্বী ৩/৩০; মির‘আত ৪/২৬৪-৬৫। [13] . নায়লুল আওত্বার ৩/২৯৬; মির‘আত ৪/২৫৯। [14] . মিরক্বাত ৩/১৬০-৬১, ১৭০; মির‘আত হা/১২৬২, ১২৬৪, ১২৭৩ -এর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্যঃ ৪/২৬০-৬২, ২৭৫। [15] . দারাকুৎনী হা/১৬৩৪-৩৫; সনদ ছহীহ। [16] . হাকেম ১/৩০৫, আবুদাঊদ, দারেমী, মিশকাত হা/১২৬৯, ১২৭২। [17] . নাসাঈ হা/১৭০১, ‘ক্বিয়ামুল লাইল’ অধ্যায়-২০, অনুচ্ছেদ-৩৭; মির‘আত ৪/২৬০। [18] . তিরমিযী, আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২৭৩। [19] . প্রাগুক্ত, মিশকাত হা/১২৭৩; মির‘আত ৪/২৮৩; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৪৬। [20] . আবুদাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১২৯১-৯২ ‘কুনূত’ অনুচ্ছেদ-৩৬; মির‘আত ৪/৩০৮। [21] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২৮৯; ইবনু মাজাহ হা/১১৮৩-৮৪, মিশকাত হা/১২৯৪; মির‘আত ৪/২৮৬-৮৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৪৭; আলবানী, ক্বিয়ামু রামাযান পৃঃ ২৩। [22] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১২৮৮। [23] . বায়হাক্বী ২/২০৮; তুহফাতুল আহওয়াযী (কায়রো : ১৪০৭/১৯৮৭) হা/৪৬৩-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য, ২/৫৬৬ পৃঃ। [24] . বায়হাক্বী ২/২১১-১২; মির‘আত ৪/৩০০; তুহফা ২/৫৬৭। [25] . ইরওয়াউল গালীল হা/৪২৭; মির‘আত ৪/২৯৯, ‘কুনূত’ অনুচ্ছেদ-৩৬। [26] . তুহফা ২